ট্রেডমার্ক রেজিষ্ট্রেশন

  ট্রেডমার্ক রেজিষ্ট্রেশন বা ট্রেডমার্ক বলতে এমন একটি বিশিষ্ট ও স্বতন্ত্র প্রতীককে বোঝায় যা কোনও পণ্য প্রস্তুতকারক বা ব্যবসায়ী তার পণ্যের বা সেবার গায়ে স্থাপন করে। বর্ণ, বর্ণগুচ্ছ, শব্দ, শব্দগুচ্ছ, নকশা, ইউনিক নাম, লোগো, ডিজাইন দিয়ে মার্কাটি সৃষ্টি করা হয়। যার দ্বারা কোন পণ্য, ব্র্যান্ড ও সেবাকে চিহ্নিত করা যায়। অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যবসায়ীর পণ্য বা সেবা থেকে নিজস্ব পণ্য বা সেবাকে যাতে সহজে পৃথক করে চেনা যায়, সেই উদ্দেশ্যে ট্রেড মার্ক ব্যবহার করা হয়। যেমন- Samsung এবং Nokia সমজাতীয় পণ্য হলেও তারা আলাদা ব্র্যান্ড এবং তাদের আলাদা আলাদা ট্রেড মার্ক নিবন্ধন রয়েছে। ট্রেডমার্ক হলো একটি প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান অদৃশ্য সম্পদ। প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর বাৎসরিক হিসাবে নিবন্ধিত ট্রেডমার্ককে সম্পদ হিসেবে ভ্যালু ধরা হয়। যেমন- Samsung এর ট্রেডমার্ক / ব্র্যান্ড ভ্যালু মোট সম্পদের 27% বা 91.2 বিলিয়ন ডলার। ট্রেডমার্ক  সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন ট্রেডমার্ক রেজিষ্ট্রেশন

ট্রেডমার্ক রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া ও খরচ

ধাপ-১: ট্রেডমার্ক আবেদন দাখিল

1) মার্ক/লোগো, প্রতিরূপ অথবা বিবরণ 2) আবেদনকারীর নাম, ঠিকানা, অফিস ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ও ই-মেইল 3) পণ্য/সেবার ধরণ ও বিবরণ 4) ট্রেড লাইসেন্স ও জাতীয় পরিচয়পত্র 5) সরকারী ফি- 5000/- 6) ভ্যাট – 750/- 7) প্রসেসিং এবং আমাদের ফি – 4000/- সর্বমোট – 9750/- টাকা। প্রতি ক্লাস/শ্রেণীভুক্ত পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা আবেদন করতে হবে ।

ধাপ-২: আবেদন যাচাঁইকরণ

দ্বিতীয় ধাপ মূলত প্রাথমিক আবেদনের ৬-১2 মাসের মধ্যে জানা যাবে যে ট্রেডমার্ককি নিবন্ধনযোগ্য কি না । এই ধাপে ট্রেডমার্কের মালিকানা যাচাই করা হয়। দেশের প্রচলিত ট্রেডমার্ক আইন ২০০৯ এর ধারা ৬,৮ ও ১০ অনুসারে আবেদনটি যাচাঁই করা হয়। যদি আপনার আগে কেউ একই বা দেখতে একই রকম ট্রেডমার্কের জন্য আবেদন করে থাকে, নকল বা অন্য কারোর নামে নিবন্ধন থাকে তাহলে আপনার মার্কটি নিবন্ধন হবে না বা পরবর্তী ধাপে যাবে না। আবার যদি এমন হয় আপনার মার্কটি অন্যকোন প্রতিষ্ঠানের মার্কের সাথে সাদৃশ্য হয় বা কিছু কিছু মিলে যায়, সেক্ষেত্রে ট্রেডমার্ক রেজিষ্ট্রেশন অফিস আপনাকে ২ মাসের মধ্যে শূণানীতে হাজির বা জবাব দাখিলের সময় দিয়ে নিজের মার্কের মালিকানা সংক্রান্ত প্রমাণাদি দাখিলের জন্য নোটিশ দিবে । হাজিরা বা জবাব দাখিলে ব্যর্থ হলে আপনার আবেদন পরিত্যক্ত বলে গণ্য হবে। তবে যদি একবার পরিত্যক্ত হয়ে যায় তাহলে পুনর্বহালের জন্য সরকারি ফি’সহ অতিরিক্ত আরও প্রায় 15000/- খরচ হবে। আর যদি কোন প্রকার নোটিশ ইস্যু না হয় তাহলে এই ধাপে কোন খরচ নেই। কোন প্রকার নোটিশ ইস্যু না হলে আপনার মার্কটি পরবর্তী ধাপে তথা জার্নালে প্রকাশের অনুমতি লাভ করবে।

ধাপ-৩: জার্নাল বা গেজেটে প্রকাশ

ট্রেডমার্ক রেজিষ্ট্রেশন অফিস কর্তৃপক্ষ আপনার হাজিরা এবং দাখিলকৃত প্রমাণাদীতে সন্তোষ্ট হলে আপনার মার্কটি গেজেটে প্রকাশের অনুমতি পত্র পাবে এবং গেজেট বা জার্নাল ফি জমা দিলে 5 থেকে 6মাসের মধ্যে জার্নালে আপনার মার্কটি প্রকাশিত হবে। মার্কটি জার্নালে প্রকাশ করার অর্থ হচ্ছে যদি দেশ-বিদেশের কোন ব্যক্তি বর্ণিত মার্কের বিষয়ে ক্ষুব্ধ বা সাংঘর্ষিক মনে করেন তাহলে আপত্তিকারী যেন আবেদনকারীর মার্কটির নিবন্ধনের বিরোধিতার সুযোগ পায়। মার্কটি ট্রেডমার্ক জার্নালে প্রকাশের ২ মাসের মধ্যে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি (বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে) নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিরোধিতার আবেদন দাখিল করতে পারবেন। মামলার ফলাফল আবেদনকারীর বিপক্ষে গেলে নিবন্ধনের আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করা হবে এবং ফলাফল আবেদনকারীর পক্ষে হলে নিবন্ধন প্রদানের লক্ষ্যে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। ১। সরকারি ফি- ৩০০০/- ২। ভ্যাট- ৪৫০/- ৩। আমাদের ফি- ১০০০০/- সর্বোমোট- 13450/- টাকা লাগবে

ধাপ-৪: নিবন্ধন

জার্নাল প্রকাশের পর যদি কোন বিরোধিতার আবেদন না হয় অথবা বিরোধিতার মামলাটির ফলাফল নিবন্ধনের পক্ষে হয় তাহলে বর্ণিত মার্কটি ট্রেডমার্ক রেজিষ্ট্রেশন-ভুক্ত হবে এবং আবেদনকারী এইমর্মে একটি রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট লাভ করবেন। রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ আবেদনের তারিখ হতে ৭ বছর এবং পরবর্তী প্রতি ১০ বছর অন্তর অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত (উত্তরাধিকার সূত্রে) উহা নবায়ন করা যাইবে। ১। সরকারি ফি- ২০০০০/- ২। ভ্যাট- ৩০০০/- ৩। আমাদের ফি- 20000/- সর্বোমোটঃ 43000/- টাকা লাগবে ট্রেডমার্ক সংক্রান্ত আইন